বিখ্যাত এনিমে সিরিজ নারুতোর সাথে তো আমরা প্রায় সবাই কমবেশি পরিচিত। এই নারুতো সিরিজের সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর মধ্যে জিরাইয়া চরিত্রটি অন্যতম। এছাড়া অরুচিমারু,সুনাদে এসব চরিত্রগুলোও কিন্তু কম জনপ্রিয় নয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই চরিত্র তিনটি আসলে নারুতো সিরিজের অরিজিনাল কোন চরিত্র নয়। এদের নেওয়া হয়েছে একটি প্রাচীন জাপানীজ লোকগাথা থেকে। আজকের লেখাটিতে সেই লোকগাথাটিকে নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাহলে শুরু করা যাক:
সে অনেক বছর আগেকার কথা। সে সময় জাপানের কিশু প্রদেশটি ছিলো ওগাতা পরিবারের অধীনে। এ পরিবারেই জন্ম হয় জিরাইয়ার। জিরাইয়ার জন্মের কিছুকাল পরেই সে অঞ্চলে শুরু হয় ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ। এ যুদ্ধে প্রতিপক্ষ একসময় ওগাতাদের দুর্গ দখল করে নেয় এবং দূর্গের সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ভাগ্যক্রমে একজন বিশ্বস্ত চাকরের সহযোগিতায় জিরাইয়া প্রাণে বেঁচে যান। চাকরটি তাকে নিয়ে পালিয়ে ইচিগো প্রদেশে নিয়ে আসেন এবং সেখানেই তাকে লালন পালন করতে থাকেন। ইচিগো প্রদেশে সেই সময় ডাকাতদের খুব উৎপাত ছিলো। একদিন এরকমই একদল ডাকাতের খপ্পরে পরে যান জিরাইয়া আর সেই চাকরটি। চাকরটি ডাকাতদলকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ডাকাতদল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ফলে সকল অভিভাবক হারিয়ে এই দুনিয়ায় একেবারে একা হয়ে পড়ে জিরাইয়া।
একা একাই জিরাইয়া বেড়ে উঠতে থাকেন। একসময় তিনি অপরাধ জগতের সাথে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন। তার সাহসিকতা আর অস্ত্র চালানোর পারদর্শীতার কারণে তিনি অল্পদিনেই ডাকাত হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করে ফেলেন। জিরাইয়া ছদ্মবেশ ধারণে ছিলেন খুবই পটু। তিনি যে বাড়িতে ডাকাতি করতে যেতেন, প্রথমে আগে ছদ্মবেশে গিয়ে সে বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য আশ্রয় নিতেন। সে বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তিতে সেইভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে যেতেন। এভাবে কাজ করার ফলে ডাকাত হিসেবে তিনি দ্রুতই সফল হয়ে ওঠেন।
এভাবেই জিরাইয়ার দিনকাল চলছিলো। একদিন জিরাইয়া শিনানো প্রদেশে এক ধনবান বৃদ্ধের ব্যাপারে জানতে পারেন। বৃদ্ধটি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে জিরাইয়া একজন তীর্থযাত্রীর ছদ্মবেশ নিয়ে শিনানো প্রদেশের দিকে যাত্রা শুরু করেন। সময়টা তখন শীতকাল। শিনানোর মতো পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে শীতের প্রভাব ছিলো আরো বেশি। ঘন ঘন তুষার ঝড় লেগেই থাকতো। যাত্রাপথে এমনই এক প্রবল তুষার ঝড়ের মুখোমুখি হন জিরাইয়া। উপায়ন্তর না দেখে শেষ পর্যন্ত একটি কুঁড়েঘরে আশ্রয় নেন তিনি। কুঁড়েঘরটায় এক তরুণী বাস করতো। তরুণীটির আতিথেয়তায় জিরাইয়া মুগ্ধ হয়ে গেলেন। তবে হাজার হলেও জিরাইয়া একজন কুখ্যাত ডাকাত। রাত গভীর হলে জিরাইয়ার সেই ডাকাত সত্ত্বাটিও ধীরে ধীরে জেগে ওঠে। তিনি একটা ছোরা নিয়ে চুপিচুপি মেয়েটার ঘরে উপস্থিত হন।
মেয়েটি তখন একটি বই পড়ায় নিমগ্ন ছিলো। জিরাইয়া চুপিচুপি মেয়েটার পিছনে এসে দাঁড়ায়। এরপর ছোরাটি তুলে মেয়েটিকে আঘাত করতে উদ্ধত হয়। তার উদ্দেশ্য ছিলো মেয়েটিকে হত্যা করে সবকিছু লুট করে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু আঘাত করার আগেই অলৌকিক একটা ব্যাপার ঘটে। মেয়েটি হঠাৎ করেই একজন বৃদ্ধ লোকে রূপান্তরিত হয়ে যায়। লোকটি একটানে ছোরাটা জিরাইয়ার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়, এরপর সেটিকে দু টুকরো করে মেঝেতে ছুড়ে ফেলে।
ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে উঠলেও জিরাইয়া ততক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়েছে। বৃদ্ধ লোকটি জানালেন, তার নাম ডোজিন। তিনি এই পাহাড়ে কয়েকশত বছর ধরে রয়েছেন। ডোজিন একজন দক্ষ জাদুকর। তিনি তার জাদু ক্ষমতা বলে যেকোনো কিছুর রূপ নিতে সক্ষম। যদিও তিনি প্রকৃতপক্ষে একটি ব্যাঙ। ডোজিন আরও বললেন, তিনি চাইলে এখনই জিরাইয়াকে হত্যা করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা করবেন না। তিনি জিরাইয়াকে ভালো মানুষ হওয়ার আরেকটি সুযোগ দিতে চান। জিরাইয়া নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারেন। তিনি ডোজিনের পায়ে লুটিয়ে পড়ে তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ডোজিন জিরাইয়াকে ক্ষমা করে দেন এবং তাকে প্রস্তাব দেন তার শিষ্য হওয়ার। জিরাইয়া খুশি মনেই সে প্রস্তাব গ্রহণ করেন। শুরু হয় জিরাইয়ার নতুন যাত্রা।
জিরাইয়া কয়েক মাসের মধ্যেই ডোজিনের কাছ থেকে জাদুবিদ্যার নানা ধরণের কৌশল শিখে ফেলেন। তিনি ততদিনে ঝড়-বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করার বিদ্যা, প্লাবন তৈরির বিদ্যা, গাছপালা নিয়ন্ত্রণ করার বিদ্যাসহ অনেক ধরনের জাদুবিদ্যাই আয়ত্ত্ব করে ফেলেছেন। উল্লেখ্যযোগ্য যে বিদ্যাটি তিনি আয়ত্ত্ব করে নিয়েছেন বলা যায়, তা হলো ব্যাঙদের নিয়ন্ত্রণ করার বিদ্যা। তিনি এখন চাইলেই বিশাল বিশাল আকৃতির ব্যাঙদের ডেকে আনতে পারেন, তাদের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যার ফলে তিনি সহজেই তাদের পিঠে চড়ে বিশাল নদী মুহূর্তের মধ্যে পার হতে পারেন। এছাড়া, ভারী মালামাল বহনের ক্ষেত্রেও তিনি এসব দানবাকৃতির ব্যাঙদের থেকে সাহায্য নিতে পারেন।
জাদুবিদ্যার কলাকৌশলগুলো শিখে নেওয়ার পর ডোজিন একদিন জিরাইয়াকে ডেকে পাঠালো। এরপর বললো, তোমাকে শিখানোর মতো আমার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। কাজেই এখন আমার বিদায় নেওয়ার সময় এসে গেছে। আমি চাই তুমি তোমার এ বিদ্যা মানুষের উপকারে কাজে লাগাও। যত অসৎ ধনী রয়েছে, তাদের কাছ থেকে অর্থ লুট করে এনে তুমি তা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দাও। জিরাইয়া ডোজিনকে কথা দিলো সে এই বিদ্যাকে সর্বদা সৎ উদ্দেশ্যই ব্যবহার করবে। এরপর ডোজিন তার আসল রূপে ফিরে যান, এরপর জিরাইয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দিগন্তের পথে যাত্রা শুরু করেন।
এরপর জিরাইয়ার কাজের ধরনই পাল্টে যায়। যত অসৎ সুদখোর মহাজন, ঘুষখোর, অন্যের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে ভোগদখল করা ব্যক্তি রয়েছে, তাদের কাছ থেকে সম্পদ লুট করে এনে তা গরীব, নিঃস্বদের মাঝে বিলিয়ে দিতে থাকেন জিরাইয়া। অসৎ লোকদের নিকট জিরাইয়া যেন হয়ে ওঠেন সাক্ষাত যমদূত। অন্যদিকে গরীবদের নিকট তিনি আবির্ভূত হন রক্ষাকর্তা হিসেবে। তার খ্যাতি লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
সেই সময় ঐ অঞ্চলে সুনাদে নামক এক তরুণী বাস করতো। রূপে ও আচার ব্যবহারে সে ছিলো সবার থেকে অনন্য। তার বন্ধুত্বসুলভ স্বভাবের জন্য সবাই তাকে পছন্দ করতো। সুনাদের নিত্যদিনের একটি কাজ ছিল বনে লাকড়ি কুড়াতে যাওয়া। তো এমনই একদিন লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে এক বৃদ্ধ লোকের সাথে দেখা হয় সুনাদের। বৃদ্ধ লোকটি সুনাদেকে ডেকে বললো, সে আসলে একটি শামুক। সুনাদের সাথে কথা বলতে তিনি একটি বৃদ্ধ লোকের রূপ নিয়েছেন। তিনি সুনাদেকে জানান, তিনি একজন দক্ষ জাদুকর। তিনি তার এ বিদ্যাটি যোগ্য কাউকে শিখাতে চান, যে কিনা তার এ বিদ্যাকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করবে। সুনাদেকে তিনি অনেক দিন থেকেই দেখছেন। এবং তার কাছে সুনাদেকেই এ কাজে সবচেয়ে যোগ্য বলে মনে হয়েছে। সুনাদেকে তিনি তার শিষ্য হিসেবে পেতে চান। সব শুনে সুনাদে সানন্দের সাথেই তার শিষ্য হতে রাজি হয়ে যায়।
এরপর থেকে প্রতিদিন সুনাদে জঙ্গলে আসতো আর বৃদ্ধ লোকটি থেকে জাদুবিদ্যার নানা কলাকৌশল শিখে নিতো। এভাবে অল্পদিনের মধ্যেই সুনাদে জাদুবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে উঠে। সে শিখে ফেলে কিভাবে বিশাল বিশাল শামুকদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এছাড়া পানির উপর দিয়ে হাঁটার বিদ্যা, অসুস্থ কাউকে সারিয়ে তোলার বিদ্যা এগুলোও সে শিখে নেয়। তার শিক্ষা শেষ হলে একদিন বৃদ্ধ লোকটি সুনাদেকে ডেকে বললো, আমার পক্ষে যা শেখানো সম্ভব আমি তোমাকে তা শিখিয়ে দিয়েছি। এ বিদ্যাটি তুমি মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাও। আরেকটা কথা, জিরাইয়ার নাম তুমি নিশ্চয়ই শুনে থাকবে। আমি চাই তোমরা দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হও। তোমাদের শক্তিকে এক সাথে কাজে লাগাও। তাহলে তোমরা অনেক অসাধ্য সাধন করতে পারবে। এরপর বৃদ্ধ লোকটি সুনাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অজানা পথের দিকে তার যাত্রা শুরু করে।
এর কয়েকদিনের মধ্যেই জিরাইয়ার সাথে সুনাদের দেখা হয়। প্রথম দেখাতেই জিরাইয়ার সুনাদেকে ভালো লেগে যায়। জিরাইয়া সুনাদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। সুনাদেরও জিরাইয়াকে পছন্দ হয়ে গিয়েছিলো। আর বৃদ্ধ লোকটার উপদেশ তো আছেই। কাজেই অল্পদিনের মধ্যে বেশ ধুমধামের সাথে দুজনের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।
তাদের বিয়ের কিছুদিন পরেই জাপানের দুইটি বিখ্যাত রাজপরিবার সুকিকাগে ও ইনোকাগে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে তা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রূপ নেয়। ইনোকাগে পরিবার তাদের হয়ে সুকিকাগে পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কুখ্যাত দস্যু অরুচিমারুকে ভাড়া করে।
নৃশংস দস্যু হিসেবে অরুচিমারুর বেশ কুখ্যাতি ছিলো। অরুচিমারুর বাবা একজন মানুষ হলেও তার মা ছিলো একজন সাপ। ফলে সাপদের ক্ষমতার প্রায় সবকিছুই অরুচিমারুর মধ্যে ছিলো। সর্প জাদুবিদ্যায় সে ছিল সিদ্ধহস্ত। সে চাইলেই প্রতিপক্ষের উপর শক্তিশালী বিষ নিক্ষেপ করতে পারতো, যার সামনে বাঘা বাঘা যোদ্ধারাও অসহায় হয়ে পড়তো। মানুষ হত্যা করা তার কাছে ছিলো অনেকটা নেশার মতোন। তাই যখন ইনোকাগে পরিবার তাদের হয়ে অরুচিমারুকে যুদ্ধ করতে আহ্বান জানায়, তখন অরুচিমারু সানন্দেই রাজি হয়ে যায়।
সুকিকাগে পরিবারের পক্ষে অরুচিমারুকে একা থামানো সম্ভব ছিলো না। তাই তারা জিরাইয়া ও সুনাদের কাছে গিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে। অরুচিমারুর মতো কুখ্যাত দস্যুকে থামাতে তারা শেষ পর্যন্ত সুকিকাগে পরিবারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়।
এখন যেহেতু এক পক্ষের সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত হয়েছে ব্যাঙ ও শামুকের জাদুশক্তি, অন্যদিকে অপর পক্ষের সাথে সর্প জাদুশক্তি, সেহেতু যুদ্ধটা যে প্রলয়ংকারী হবে সেটা তো অনুমিতই ছিলো।
রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে উভয় পক্ষেরই বহু সেনা হতাহত হয়। শেষ পর্যন্ত জিরাইয়াও অরুচিমারুর বিষ দ্বারা আক্রান্ত হন। সুনাদে আহত জিরাইয়াকে নিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হন।
সুনাদের চিকিৎসার প্রভাবে জিরাইয়া এ যাত্রায় কোনমতে বেঁচে যান। কিন্তু বিষের প্রভাবে জিরাইয়ার সমস্ত শরীর অবশ হয়ে পড়ে। এই বিষের প্রতিষেধক না পাওয়া পর্যন্ত জিরাইয়া কোনভাবেই সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারবেন না। আর এ বিষের প্রতিষেধক তৈরির জন্য লাগবে মানুষের রক্ত। এমন এক ব্যক্তির রক্ত, যে কিনা একটি নির্দিষ্ট বছরের নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট ঘণ্টায় জন্মগ্রহণ করেছে।
জিরাইয়া সুকিকাগে পরিবারের এক পালিতা মেয়ের ব্যাপারে জানতে পারে, যে কিনা সেই নির্দিষ্ট দিনেই জন্মগ্রহণ করেছে। মেয়েটির নাম আয়ামে। প্রবল বিষ্ময়ে জিরাইয়া আবিষ্কার করে, পালিতা মেয়েটি আসলে তার আপন বোন। সেই গৃহযুদ্ধের সময় তার বোনটিও ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান।
আয়ামেও জানতে পারে জিরাইয়া তার আপন ভাই। সে আরো জানতে পারে, তার ভাইকে সুস্থ করার জন্য তার রক্ত দরকার। আয়ামে বুঝতে পারে, প্রতিষেধক তৈরিতে যেটুকু রক্ত দরকার, তাতে তার নিজের জীবনই শেষ হয়ে যেতে পারে। ফলে জিরাইয়া তাতে কখনোই রাজি হবে না। তাই সে নিজেই নিজের শরীরে ছুরিকাঘাত করে শরীর থেকে রক্ত বের করে আনে। ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবনটাকেই উৎসর্গ করে দেয় আয়ামে।
আয়ামের রক্ত দিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতিষেধক তৈরি হয়। জিরাইয়াও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। জিরাইয়া প্রতিজ্ঞা করেন, তিনি তার বোনের এ আত্মত্যাগ বৃথা হতে দেবেন না। জিরাইয়া আর সুনাদে পুনরায় অরুচিমারুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। দ্বিতীয় দফায় আবার শুরু হয় এই প্রলয়ংকারী মহাযুদ্ধ। জিরাইয়া এবার নিজের সবটুকু দিয়ে লড়াই করে যান, বোনকে হারানোর বেদনাকে পরিণত করেন শক্তিতে। শেষ পর্যন্ত অরুচিমারুর পরাজয় ঘটে। জিরাইয়া ও সুনাদে দুজনে মিলে অরুচিমারুকে হত্যা করতে সক্ষম হন। অবশেষে এ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
এ যুদ্ধে জেতার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সুকিকাগে পরিবার একটি এলাকার শাসনভার জিরাইয়া ও সুনাদের হাতে তুলে দেন। রণ-ক্লান্ত জিরাইয়া শেষ পর্যন্ত অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন বাকি জীবনটুকু পরিবার নিয়েই নীরবে কাটিয়ে দিবেন। বহু ঘটনাবহুল বসন্ত পার করা জিরাইয়ার জীবনে অবশেষে সুখ ফিরে আসে।